মাহিয়াত বা অনিদ্রা (Insomnia): এটি একটি মানসিক রোগ। এর শাব্দিক অর্থ অনিদ্রা, জাগ্রত থাকে বেদারী। এ রোগ হবার কারণে রোগীর নিদ্রা সম্পূর্ণভাবে লোপ পায়। মস্তিষ্ক মাহিয়াত; এটি একটি মানসিক রোগ। এর শাব্দিক অর্থ অনিদ্রা, জাগ্রত থাকা স্নায়ুর দুর্বলতার জন্য এ অবস্থার সৃষ্টি হয়ে থাকে। রক্তের বিষক্রিয়ার কারণে, যেমন গুর্দার কারণে প্রস্রাব বন্ধ হলে, রক্তাপ্লতার কারণে ।
কৈফিয়তের উপর ভিত্তি করে সাহার তিন প্রকার।
যথা- ১. সাহার-ই এখতিয়ারী বা ইচ্ছাভিত্তিক অনিদ্রা। এর কারণ,
যেমন ক. ব্যস্ততা যথা- ব্যবসা-বাণিজ্য,
খ. খাদ্যের অভাব,
গ. অতিভোজন।
ক. ভবিষ্যতের কিছু নিয়ে চিন্তার কারণে,
খ. ভয়ের কারণে,
গ. আনন্দের কারণে,
ঘ. দুঃশ্চিন্তার কারণে,
ক. সারসাম,
খ. জুনুন বা পাগল হওয়া,
গ. Brain -এর মধ্যে লবণাক্ততা সঞ্চয়,
ঘ. কোন কোন সময় সূয়ে মিযাজী,
ঙ. শীতল ও শুষ্ক আখলাত মস্তিষ্কে সঞ্চয়,
চ. সওদার বিকৃতি ঘটা, ছ. জ্বর, ব্যথা ও বদহজম,
জ. রিয়াহ-এর যে কোন বিপত্তি। যথা- হাঁপানী, কাশি, শ্বাস কষ্ট।
ঝ. মস্তিষ্কে ছফরা বা হাওয়া সওদা সঞ্চয়।
সাহার বা অনিদ্রার লক্ষণসমূহ
১. সওদাভী হলে-
ক. জিহ্বা শুষ্ক হবে
খ. কাল পায়খানা হবে
২. অনিদ্রা হবে,
৩. শরীরে জ্বালা-পোড়া থাকবে,
৪. মুখ তিতা হবে,
৫. অভ্যাসের ব্যতিক্রম ঘটবে,
৬. পিপাসা বেশি হবে,
৭. হৃদকম্পন বেশি হবে,
৮. দেহে অস্বস্তিবোধ হবে।
সাহার-এর উসুলে এলাজ
১. সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করে তার চিকিৎসা করা।
২. যে কোন উপায়ে মস্তিষ্কে ঔষধ পৌঁছানো। যথা- লখলখা, এনেকেবাব বা নতুল ইত্যাদি প্রক্রিয়া অবলম্বন করা।
৩. দূষিত আখলাত-এর সঞ্চয় থাকলে তার মুনজ্যি, মুসহিল দিয়ে নিঃসরণ করতে চেষ্টা করা।
৪. কব্য থাকলে তা দূর করা।
১. নতুল করার জন বনফশা নীলুফর বোগ কাহু ধনিয়া আজোয়াইনে খোরাসানি পোস্তে খাশখাশ সমপরিমাণ নিয়ে আট গুণ পানিতে জ্বাল দিয়ে ঠাণ্ডা করে সরু নল দিয়ে মাথায় ঢালতে হবে। হাল্কা গরম পানিও ব্যবহার করা যায়
২. তেলের মাধ্যমে মাথায় ঠাণ্ডা পৌঁছানো। যেমন রওগনে বাবুনা, রঙগনে কদু ইত্যাদি ।
৩. যেমাদ বা প্রলেপ: তোখমে খুরফা ৩ গ্রাম, তোখমে কাহু ৩ গ্রাম, তোখমে নীলুফর ৩ গ্রাম । ছন্দল সফেদ ৩ গ্রাম, কাফুর ১ গ্রাম, আফিউন ৫০ গ্রাম, জাফরান ৫০০ মিলিগ্রাম সবগুলো উপাদান রওগনে গুল এবং ধনিয়ার পানির সাথে মিশ্রিত করে বেটে, পিষে প্রলেপ দিতে হবে।
৪. মাথায় যদি ব্যথা থাকে তবে হাব্বে জয়ার ২ টা করে ৭ দিন, মাজুনে শাহী ৬ গ্রাম করে দৈনিক দুবার ।
৫. লবানুল বকর ৮৫ মি. লি. শরবতে উন্নাব ৮৫ মি. লি. একত্রে তিন দিন সকালে সেব্য । তার পর প্রতিদিন ১২ মি. লি. পরিমাণ বাড়াতে হবে। দুধের পরিমাণ ৪১ মি. লি. এবং শরবতে উন্নাব -এর পরিমাণ ৪ মি. লি. হলে সেবন বন্ধ করতে হবে।
৬. মোকাব্বিয়াত হিসেবে খামিরায়ে আবরেশম, শিরায়ে উন্নাব প্রয়োগ করতে হবে ।
ছফরাভীর কারণে হলে
৭. ক. মাউল যুবান
খ. গরম দুধ পানি দিয়ে ফুটানোর পর তাতে সাইট্রিক এসিড লেবু/সির্কা দিয়ে ছানা হলে ছেঁকে পানি সেবন করানো।
৮. ছুয়ে হজম বা বদহজম হলে জাওয়ারিশে জালীনূস, কুস্তায়ে খুবসুল হাদীদ, কুস্তায়ে মারজান ইত্যাদি।
৯. মোকাব্বিয়াত হিসেবে-
এত্রিফলে মোকাব্বিয়ে দেমাগ
খামীরায়ে গাওজবান আম্বরি জাওহারওয়ালা।
১০. মোরাকাব ঔষধ: উসরুল, দাওয়াউশ শেফা, আজমালিন, উসুফিন ইত্যাদি।
Related Post: