বদনজরের চিকিৎসার ব্যাপারে রাসুল থেকে কয়েকটি পদ্ধতি বর্ণিত হয়েছে। আবু দাউদ রহ. স্বীয় সুনান গ্রন্থে হযরত সাহাল বিন হানিফ রাযি. থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, একদা আমরা একটি প্রবাহিত নদীর পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলাম। আমি সেই নদীতে নেমে গোসল করে নিলাম। যখন উপরে উঠলাম তখন আমার শরীরে অনেক জ্বর ছিল। এই খবর রাসুল -কে দেওয়া হলো। তখন রাসুল বললেন, তোমরা আবু সাবেতকে বলো, সে যেন তাআওউজ পাঠ করে নেয়।
আমি জিজ্ঞাসা করলাম- ঝাড়-ফুঁক করলে বেশি ভালো হয় না? রাসুল জবাব দিলেন, বদনজর, জ্বর, বিচ্ছু কাটা ব্যতীত অন্যকিছুর জন্য ঝাড়-ফুঁক করা বৈধ নয়।
তাআওউজাত ও ঝাড়-ফুঁকের নির্দেশনা
তাআওউজাত ও ঝাড়-ফুঁক অন্যতম নির্দেশনাগুলো হলো,
১. মুআওবিযাতাইন তথা সুরাতুল ফালাক ও সুরাতুন নাস পাঠ করা।
২. সুরা ফাতেহা পাঠ করা। ৩. আয়াতুল কুরসি ইত্যাদি বেশি বেশি পাঠ করা।
রাসুল (সা.) কর্তৃক বিশেষ তাআওউজাত -এর নির্দেশিত তাআওউজাতের অন্যতম হলো,
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ.
আমি আল্লাহ তাআলার ‘কালিমায়ে তাম্মা’র মাধ্যমে মাখলুকের অনিষ্টতা থেকে তাঁর নিকট আশ্রয় চাই।
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ الله التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ، وَمِنْ كُلَّ عَيْنٍ لَامَّةٍ.
আমি আল্লাহ তাআলার ‘কালিমায়ে তাম্মা’র মাধ্যমে প্রত্যেক খারাপ চিন্তা সৃষ্টিকারী শয়তান এবং প্রত্যেক বদ নজর থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই।
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ الله السَّامَّاتِ الَّتِي لَا يُجَاوِزُهُنَّ بَرُّ وَلَا فَاجِرُ، مِنْ شَرِّ مَا خَلَلٍ وَذَرَأَ وَبَرَاء وَمِنْ شَرِّ مَا يَنْزِلُ مِنَ السَّمَاءِ، وَمِنْ شَرِّ مَا يَعْرُجُ فِيهَا، وَمِنْ شَرما ذَرَأَ فِي الْأَرْضِ، وَمِنْ شَرِّ ما يخرج منها، ومن شرفتن اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ، وَمِن شر طَوَارِقِ اللَّيْلِ إِلَّا طَارِقًا يَطْرُقُ بِخَيْرٍ يَا رَحْمَنُ.
আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই ওই সকল ‘কালিমায়ে তাম্মা’র মাধ্যমে, বার থেকে কোনোপ্রকার ভালো-খারাপের মুক্তি নাই। মাখলুকের প্রকাশ্য ও গোপন অনিষ্টতা থেকে। ওইসকল জিনিসের অনিষ্টতা থেকে যা আসমান থেকে নামে এবং ওই সকল জিনিসের অনিষ্টতা থেকে যা জমিনে ঢুকে পড়ে ও জমিন থেকে বের হয়। রাত-দিনের ফিতনা ও রাতে আগত বিপদ থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই। তবে হে দয়াময়! এমন আগন্তুকের নয়, যে ভালো খবর নিয়ে আসে।
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ الله التَّامَّةِ مِنْ غَضَبِهِ وَعِقَابِهِ، وَمِنْ شَرْ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ.
আমি আল্লাহর ‘কালিমায়ে তাম্মা’র মাধ্যমে তাঁর রাগ, শাস্তি ও তাঁর বান্দাদের অনিষ্টতা এবং শয়তানের ধোঁকা ও মৃত্যুর সময় উপস্থিত হওয়া থেকে তার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِوَجْهِكَ الْكَرِيمِ، وَكَلِمَاتِكَ السَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا أَنْتَ آخِذٌ بِنَاصِيَتِهِ اللَّهُمَّ أَنْتَ تَكْشِفُ الْمَأْثَمَ وَالْمَغْرَمَ اللَّهُمَّ إِنَّهُ لَا يُهْزَمُ جُنْدُكَ، وَلَا يُخلف وعدك، سُبْحَانَكَ وَبِحَمْدِكَ.
হে আল্লাহ! আমি তোমার উচ্চ সম্মান ও মর্যাদা এবং তোমার ‘কালিমায়ে জাম্মা’র মাধ্যমে তোমার আয়ত্ত্বাধীন সকল জিনিসের অনিষ্টতা থেকে তোমার নিকট আশ্রয় চাই। হে আল্লাহ! তুমিই ঋণ ও গুনাহকে দূর করো। হে আল্লাহ!
তোমার দল কখনো পরাজয় বরণ করেনি। তোমার প্রতিশ্রুতি পূরণ হবেই। তুমি পবিত্র এবং তুমিই প্রশংসার উপযুক্ত।
‘ أَعُوذُ بِوَجْهِ اللَّه الْعَظِيمِ الَّذِي لَا شَيْءَ أَعْظَمُ مِنْهُ، وَبِكَلِمَاتِهِ النَّامَّاتِ الَّتى لَا يجَاوِزُهُنَّ بَر وَلَا فَاجِرٌ، وَأَسْمَاءِ الله الحُسْنَى مَا عَلِمْتُ مِنْهَا وَمَا لَمْ أَعْلَمُ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ وَذَرَأَ وَبَرَأ، وَمِنْ شَرِّ كُلَّ ذِي شَرِّ لَا أَطِيقُ شَرَّهُ، وَمِنْ شَرِّ كُلِّ ذِي شَرٌ أَنْتَ آخِذٌ بِنَاصِيَتِهِ، إِنَّ رَبِّي عَلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ
আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি আল্লাহর সম্মানিত ও সুমহান (কুদরতি) চেহারার মাধ্যমে যার থেকে বড় কোনো জিনিস হতে পারে না এবং তার ‘কালিমায়ে তাম্মা’র মাধ্যমে যার চেয়ে ভালো ও বড় ব্যক্তি কোনো আগে বাড়তে পারবেনা। আল্লাহর সুন্দর নামের মাধ্যমে ওই সকল মাখলুকের প্রকাশ্য ও গোপন অনিষ্টতা থেকে আশ্রয় চাই, যা জানা আছে এবং যা জানা নেই। সকল অনিষ্টের অনিষ্টতা থেকে যার অনিষ্টতা প্রতিহত করার শক্তি আমার নেই এবং প্রত্যেক খারাপের খারাবি থেকে আশ্রয় চাই। সবকিছু তোমার আয়ত্বাধীন। নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক সঠিক পথে রয়েছেন।
اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ عَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ، وَأَنْتَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ، مَا شَاءَ الله كَانَ، وَمَا لَمْ يَشَأْ لَمْ يَكُنْ، لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ، أَعْلَمُ أَنَّ الله عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ، وَأَنَّ الله قَدْ أَحَاطَ بِكُلِّ شَيْءٍ عِلْمًا، وَأَحْصَى كُلَّ شَيْءٍ عَدَدًا، اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ نَفْسِي، وَشَرِّ الشَّيْطَانِ وَشِرْكِهِ، وَمِنْ شَرِّ كُلَّ دَابَّةٍ أَنْتَ آخِذٌ بِنَاصِيَتِهَا، إِنَّ رَبِّي عَلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ.
হে আল্লাহ! তুমিই আমার প্রতিপালক । তুমি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই। তোমার উপরই আমি ভরসা করছি এবং তুমিই মহান আরশের প্রতিপালক। আল্লাহ যা চেয়েছেন, তাই হয়েছে আর যা চাননি তা হয়নি। আল্লাহ ছাড়া কারও শক্তি-সামর্থ্য নেই। আমি জানি, আল্লাহ সব জিনিসের উপর সামর্থ্যবান এবং আল্লাহর ইলম সব জিনিসকে বেষ্টন করে রেখেছে। সব জিনিসের সংখ্যা তার নিকট রয়েছে। হে আল্লাহ! আমি আমার নফসের অনিষ্টতা এবং শয়তানের অনিষ্টতা এবং তার শরিক থেকে তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। প্রত্যেক জীবন্ত বস্তুর খারাবি থেকে যার আয়ত্ত্ব তোমার হাতে। সেগুলো হতে তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক সঠিক পথে রয়েছেন। অথবা চাইলে এভাবেও বলা যেতে পারে,
تحصَّنَتُ بالله الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ، إِلهِي وَإِلَهِ كُلِّ شَيْءٍ، وَاعْتَصَمْتُ بِرَبِّي وَرَبِّ كُل شَيْءٍ، وَتَوَكَّلْتُ عَلَى الْحَيَّ الَّذِي لَا يَمُوتُ، وَاسْتَدْفَعْتُ الشَّرَّ بِلَا حَوْلَ وَلَا قوة إلا بالله، حَسْبِيَ الله وَنِعْمَ الْوَكِيلُ، حَسْبِيَ الرَّبُّ مِنَ الْعِبَادِ، الْعِبَادِ، حَسَبِيَ الْخَالِقُ مِنَ الْمَخْلُوقِ، حَسَبِيَ الرَّازِقُ مِنَ الْمَرْزُوقِ حَسْبِيَ الَّذِي هُوَ حَسْبِي، حَسْبِيَ الَّذِي بِيَدِهِ مَلَكُوتُ كُلِّ شَيْءٍ، وَهُوَ يُجِيرُ وَلَا يُجَارُ عَلَيْهِ حَسْيَ الله وَكَفَى سَمِعَ الله لِمَنْ دَعَا لَيْسَ وَرَاءَ الله مَرْعَى حَسْبِيَ الله لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ، عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ، وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ العظيم.
আমি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’-এর দূর্গ বানিয়ে নিয়েছি। তিনি আমার এবং সমস্ত জিনিসের প্রতিপালক । আমি আমার এবং সমস্ত জিনিসের প্রতিপালকের নিকট যুক্তি কামনা করছি। এমন জীবিত সত্তার উপর ভরসা করছি, যে কখনো মৃত্যুবরণ করবে না। আর আমি অনিষ্টতাকে ‘লা হাউলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ দ্বারা প্রতিহত করছি। আল্লাহ আমার জন্য যথেষ্ট। তিনিই সবচেয়ে উত্তম সামর্থ্যবান। বান্দার মোকাবেলায় আল্লাহ আমার জন্য যথেষ্ট এবং স্রষ্টা আমার কাছে সৃষ্টির মোকাবেলায় যথেষ্ট। রিজিকদাতা আমার কাছে রিজিক গ্রহীতার তুলনায় যথেষ্ট। আমার জন্য ওই সত্তা যথেষ্ট যার আয়ত্ত্বে এবং সামর্থ্যে সব জিনিসের মালিকানা। তিনি শাস্তি দিতে পারেন, তাকে কেউ সাজা দিতে পারে না। আমার জন্য ওই আল্লাহ যথেষ্ট যিনি আহ্বানকারীর আহ্বান শুনেন। আল্লাহ ছাড়া আমার আর কোনো উদ্দেশ্য নাই। আল্লাহ আমার জন্য যথেষ্ট, যিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই। তার উপরই আমি ভরসা করেছি এবং তিনিই মহান আরশের মালিক।
১. মুসনাদে হারিছ, হাদিস : ১০৫২,
আমালুল ইয়াওম ওয়াল লাইলাহ, হাদিস : ৫৮। হযরত হাসান বহু থেকে বর্ণিত। মাকারিমুল আখলাক, ইমাম খরায়েতি, হাদিস : ৮৬৮, আদ-দোয়া, তাবারানি, হাদিস : ২. হাদিসের অনুসন্ধান করা সম্ভব হয়নি।
যারা এই দুআ এবং তাবিজের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন তারা এর উপকার গেছে। এর দ্বারা বদনজরের প্রভাব দূরীভূত হয়। যার ইমানি শক্তি গড়ে শক্তিশালী, সে ততো বেশি উপকার লাভ করবে। এটি স্বয়ং তার নফসের শক্তি, ব্যক্তির যোগ্যতা, তাওয়াক্কুলের শক্তি এবং অন্তরের দৃঢ়তার শক্তি। কারণ, দুআ একটি অস্ত্র এবং অস্ত্র পরিচালনার জন্য ব্যবহারকারীর শক্তি ও সামর্থ্য থাকা জরুরি।
যদি কোনো বদনজরকারী ব্যক্তি কারও ওপর নিজের নজর লাগার আশঙ্কা করে, তাহলে তার উচিত তৎক্ষণাৎ আপন কুদৃষ্টির অনিষ্ট হতে রক্ষার জন্য এই দুআ পড়া, اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَيْهِ হে আল্লাহ! আপনি তাকে বরকত দিন হযরত সাহল ইবনু হুনাইফ রাযি. যখন কুদৃষ্টির শিকার হোন তখন এই একই দুআ নবিয়ে আকরাম হযরত আমির বিন রাবিয়া রাযি.-কে বলেছিলেন। রাসুল হযরত আমির রাযি.-কে জিজ্ঞাসা করলেন, কেন তুমি তাকে দেখে বরকতের দুআ করলে না এবং এ পড়লে না?
এমনিভাবে বদনজরের প্রভাব পড়ার দ্বারাও নিঃশেষ হয়ে যায়। হযরত হিশাম ইবনু উরওয়া রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি স্বীয় পিতা উরওয়া রহ. থেকে বর্ণনা করেন, যখন তিনি এমন কোনো জিনিস দেখতেন বা তার ভালো লাগতো অথবা নিজ বাগানের সবুজ-শ্যামল অংশে প্রবেশ করতেন তখন ‘মাশাআল্লাহ, লা হাউলা অলা কুউয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’।
অনুরূপভাবে হযরত জিবরিল আলাইহিস সালাম থেকে বর্ণিত দুআ, যা পড়ে তিনি রাসুল -এর উপর দম করেছিলেন। ইমাম মুসলিম রহ. সহিহ গ্রন্থে এই শব্দে বর্ণনা করেছেন,
بِاسْمِ اللهِ أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ، مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِد الله يَشْفِيكَ بِاسْمِ اللهِ أَرْقِيكَ.
আল্লাহর নামে আমি আপনার উপর দম করছি প্রত্যেক ওই বস্তু থেকে যা আপনাকে কষ্ট পৌঁছায় এবং প্রত্যেক কুদৃষ্টির অনিষ্ট থেকে এবং হিংসুকের খারাপ দৃষ্টি থেকে আল্লাহ আপনাকে শিফা দান করুন। আমি ‘দম’ করছি আপনার উপর আল্লাহর নামে।
পূর্ববর্তী উলামায়ে কেরামদের একটি জামাত” এ ব্যাপারে অনুমতি দিয়েছেন যে, কুরআনের আয়াত লিখে তা পানিতে গুলিয়ে অসুস্থ ব্যক্তিকে পান করানো যেতে পারে। বিশিষ্ট তাবেয়ি হযরত মুজাহিদ ইবনু জাবর রহ. বলেন, কুরআনে কারিমের আয়াত লিখে তা ধৌত করার পর উক্ত পানি পান করানোতে কোনো সমস্যা নেই ।
এক মহিলার সন্তান প্রসবে কষ্ট হলে, তিনি কুরআনের আয়াত লেখে তা ধৌত করে পানি পান করানোর নির্দেশ দেন। আবু হযরত আইয়ুব রহ. বর্ণনা করেন, আমি আবু কিলাবা কে দেখেছি, তিনি কুরআনের কিছু অংশ লিখলেন। অতঃপর পানিতে ধৌত করে সেই পানি প্রচণ্ড ব্যথায় কাতর এক ব্যক্তিকে পান করিয়েছেন। উক্ত ব্যক্তির ব্যথার কারণ ছিল পাগলামী বা উন্মাদনা।
[কিছু কথা : রেফারেন্স] বাইহাকি, হাদিস : ২২৪১, (হযরত ইবরাহিম নাখয়ি রহ.-এর বর্ণনা) আল-কুনা ওয়াল আসমা, দোলাবি, হাদিস : ১৭৪৬, (হযরত হাসান রহ.-এর বর্ণনা) ।
লক্ষণীয় বিষয় হলো, উল্লেখিত আলোচনাটি সরাসরি কোনো সহিহ কিংবা দুর্বল হাদিস থেকে প্রমাণিত নয়। সাহাবা রাযি.-এর মাঝে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক থেকেও বিষয়টি বর্ণিত নয়। তাই এ বিষয়টি পালনে যেমন কোনো বাড়াবাড়ি করা উচিত নয়, তেমনি কেউ আমল করলে তাকে অনার্থক সমালোচনা করাও ঠিক নয় । এক্ষেত্রে করণীয় হলো, যদি জীবন-মরণের প্রশ্ন না হয় তাহলে কুরআনের এমন ব্যবহার করা সমীচীন নয় । এতে সাধারণ মানুষের মাঝে কুরআনকে বাস্তবজীবনে পালন করার প্রবল আগ্রহের মাঝে দুর্বলতা সৃষ্টি হবে। তারা কুরআনে কারিমকে শুধু তাবিজ-কবজ মনে করবে। কোরআন কারিম পাঠ, গবেষণা ও বাস্তবিক জীবনে পালন ইত্যাদি বিষয়ের প্রতি তাদের গুরুত্ব হারিয়ে যাবে।
Related Post: